গ্যাস্ট্রিক দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায়
গ্যাস্ট্রিক দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায়
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যাটি সহজেই এড়ানো যায়। আসুন জেনে নিই গ্যাস্ট্রিক দূর করার কিছু কার্যকর উপায়ঃ
১. নিয়মিত ও সময়মতো খাবার গ্রহণঃ
খালি পেটে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে। তাই, তিন বেলার প্রধান খাবারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খেতে হবে। খাবারের মধ্যে যেন দীর্ঘ বিরতি না থাকে।
২. ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার পরিহারঃ
ভাজা ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার গ্যাস্ট্রিকের অন্যতম কারণ। তাই এই ধরনের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। এর পরিবর্তে সেদ্ধ বা গ্রিল করা খাবার বেছে নিন।
৩. পর্যাপ্ত পানি পানঃ
পানি অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে, খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পানি পান করা উচিত নয়।
৪. খাবার চিবিয়ে খাওয়াঃ
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজমে সাহায্য করে এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়। তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
৫. দুধ ও দই খাওয়াঃ
দুধ ও দই গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে। এগুলো প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং পেটে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৬. ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহারঃ
ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম কারণ। তাই এগুলো পরিহার করা উচিত। এগুলো অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়ায় এবং পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে।
৭. হালকা ব্যায়ামঃ
হালকা ব্যায়াম, যেমন হাঁটা বা যোগব্যায়াম, হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে কার্যকর। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করা উচিত।
৮. আদা ও তুলসী পাতাঃ
আদা ও তুলসী পাতার রস গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এগুলোর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাবলী রয়েছে যা পেটে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
৯. ওষুধ সেবনঃ
যদি প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত। তবে, কোনও ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
১০. মানসিক চাপ কমানোঃ
মানসিক চাপ গ্যাস্ট্রিক সমস্যার একটি প্রধান কারণ। তাই ধ্যান, যোগব্যায়াম, বা যে কোনও রকম মানসিক চাপ কমানোর পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এই খাবারগুলো অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়াতে পারে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। আসুন জেনে নিই গ্যাস্ট্রিক হলে কী কী খাবার খাওয়া উচিত নয়ঃ
গ্যাস্ট্রিক হলে এড়িয়ে চলা খাবার
১. ভাজা ও তেলে ভাজা খাবারঃ
ভাজা ও তেলে ভাজা খাবার গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রধান কারণ হতে পারে। এই ধরনের খাবার হজম হতে সময় নেয় এবং পেটে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
২. মশলাযুক্ত খাবারঃ
মশলাযুক্ত খাবার, বিশেষ করে ঝাল মশলা, পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে এবং অ্যাসিডিটি বাড়ায়। তাই, ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
৩. ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ঃ
কফি, চা, কোলা এবং অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। এগুলো পেটে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
৪. অ্যালকোহলঃ
অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এটি পেটের প্রাকৃতিক ব্যালেন্স নষ্ট করে এবং অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়ায়।
৫. সাইট্রাস ফলঃ
লেবু, কমলা, আনারসের মতো সাইট্রাস ফল উচ্চ মাত্রার অ্যাসিড থাকে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে।
৬. টমেটো এবং টমেটো সসঃ
টমেটো এবং টমেটো সসও উচ্চ মাত্রার অ্যাসিড থাকে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে।
৭. পেঁয়াজ ও রসুনঃ
পেঁয়াজ ও রসুনও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
৮. চকোলেটঃ
চকোলেট খেলে পেটের অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৯. দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যঃ
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। যদি আপনার ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা হয়, তাহলে দুধ এড়িয়ে চলা উচিত।
১০. ব্রকলি ও বাঁধাকপিঃ
ব্রকলি, বাঁধাকপি এবং একই ধরনের সবজি গ্যাস তৈরি করতে পারে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়াতে পারে।
চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো যা আপনাকে চিরতরে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারেঃ
চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাসঃ
- সুষম খাদ্য গ্রহণঃ প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। তাজা শাক-সবজি, ফল, পূর্ণ শস্য এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
- সময়মতো খাবার খাওয়াঃ নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে।
২. কিছু খাবার এড়িয়ে চলাঃ
- ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবারঃ ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার পেটের অ্যাসিড বাড়িয়ে দেয়, তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
- ভাজা ও তেলে ভাজা খাবারঃ ভাজা ও তেলে ভাজা খাবার পেটে গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত পানি পানঃ
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহারঃ
ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই এগুলো পরিহার করা উচিত।
৫. মানসিক চাপ কমানোঃ
- যোগব্যায়াম ও ধ্যানঃ নিয়মিত যোগব্যায়াম ও ধ্যান মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
- সঠিক ঘুমঃ পর্যাপ্ত এবং সঠিক সময়ে ঘুম গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
৬. নিয়মিত ব্যায়ামঃ
হালকা ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, বা যোগব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমায়।
৭. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারঃ
- আদা ও তুলসী পাতাঃ আদা ও তুলসী পাতা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে কার্যকর। এগুলোর রস পান করা যেতে পারে।
- শসার রসঃ শসার রস পেট ঠান্ডা রাখে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
৮. ওজন নিয়ন্ত্রণঃ
অতিরিক্ত ওজন গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকেই অনুভব করেন। এই ব্যথা দূর করার জন্য কিছু কার্যকর পদ্ধতি এবং অভ্যাস অনুসরণ করা যেতে পারে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলোঃ
গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকে ব্যথা দূর করার উপায়ঃ
১. খাবার খাওয়ার নিয়ম পরিবর্তনঃ
- অল্প অল্প করে খাবার খাওয়াঃ একসঙ্গে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং অ্যাসিডিটি কমায়।
- খাবারের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি না রাখাঃ দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে অ্যাসিডিটি বাড়তে পারে, তাই খাবারের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি না রাখা উচিত।
২. কিছু খাবার এড়িয়ে চলাঃ
- ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবারঃ ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার বুকে ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে। এগুলো পরিহার করা উচিত।
- ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ঃ কফি, চা, এবং অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
৩. পর্যাপ্ত পানি পানঃ
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহারঃ
ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এবং বুকে ব্যথার কারণ হতে পারে। তাই এগুলো পরিহার করা উচিত।
৫. মাথা উঁচু করে ঘুমানোঃ
রাতে ঘুমানোর সময় মাথা কিছুটা উঁচু করে শোয়ার অভ্যাস করুন। এটি অ্যাসিড রিফ্লাক্স কমায় এবং বুকে ব্যথা দূর করে।
৬. যোগব্যায়াম ও ধ্যানঃ
নিয়মিত যোগব্যায়াম ও ধ্যান মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে, যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এবং বুকে ব্যথা কমাতে কার্যকর।
৭. আদা ও তুলসী পাতাঃ
- আদার রসঃ আদা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে এবং বুকে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। আদার রস বা আদা চা পান করতে পারেন।
- তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতার রস গ্যাস্ট্রিকের কারণে হওয়া বুকে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৮. পুদিনা পাতাঃ
পুদিনা পাতা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও বুকে ব্যথা কমাতে সহায়ক। পুদিনা পাতার চা বা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
৯. সঠিক সময়ে ওষুধ সেবনঃ
যদি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। তবে, কোনও ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে কিছু খাবার বিশেষভাবে কার্যকর। এই খাবারগুলো পেটে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সহায়ক। আসুন জেনে নিই গ্যাস্ট্রিক দূর করার কিছু উপকারী খাবারঃ
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপকারী খাবারঃ
১. আদা
আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। আদা চা বা আদার রস পান করতে পারেন।
২. দই
দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন খাবারের পর এক বাটি দই খেতে পারেন।
৩. কলা
কলা প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং পেটের অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সকালে নাস্তার সময় এক বা দুটি কলা খেতে পারেন।
৪. শসা
শসা পেট ঠান্ডা রাখে এবং অ্যাসিডিটি কমায়। সালাদে শসা যোগ করতে পারেন বা শসার রস পান করতে পারেন।
৫. তুলসী পাতা
তুলসী পাতার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। তুলসী পাতার চা বা রস পান করতে পারেন।
৬. পেঁপে
পেঁপেতে পাপেইন নামে একটি এনজাইম রয়েছে যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পেঁপে খেতে পারেন।
৭. ওটমিল
ওটমিল উচ্চ ফাইবারযুক্ত এবং সহজে হজম হয়, যা পেটে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সকালের নাস্তায় ওটমিল খেতে পারেন।
৮. এলোভেরা রস
এলোভেরা রস পেটের অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। নিয়মিত এলোভেরা রস পান করতে পারেন।
৯. মধু
মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণসম্পন্ন, যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এক চামচ মধু পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
১০. পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়। পুদিনা পাতার চা বা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে কিছু ব্যায়াম বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। নিচে কিছু ব্যায়াম উল্লেখ করা হলো যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারেঃ
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম
১. হাঁটা
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এটি হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়।
২. পবনমুক্তাসন (Pavanamuktasana)
এই যোগাসনটি পেটে জমে থাকা গ্যাস দূর করতে খুবই কার্যকর। পবনমুক্তাসন করতেঃ
- প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
- একটি পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে বুকে আনুন।
- হাত দিয়ে হাঁটু ধরে চাপ দিন।
- মাথা তুলে হাঁটুতে ঠেকানোর চেষ্টা করুন।
- কয়েক সেকেন্ড এভাবে থেকে শ্বাস ছেড়ে ধীরে ধীরে পূর্বাবস্থায় ফিরে যান।
- অন্য পায়ের জন্য একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
৩. ভুজঙ্গাসন (Bhujangasana)
ভুজঙ্গাসন বা কোবরা পোজ হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমায়। ভুজঙ্গাসন করতেঃ
- প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন।
- হাত দুটো কাঁধের নিচে রাখুন।
- শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে শরীরের উপরের অংশ উঠান।
- মাথা পেছনের দিকে টানুন এবং কয়েক সেকেন্ড এভাবে থাকুন।
- শ্বাস ছেড়ে ধীরে ধীরে পূর্বাবস্থায় ফিরে যান।
৪. সর্বাঙ্গাসন (Sarvangasana)
সর্বাঙ্গাসন হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়। সর্বাঙ্গাসন করতেঃ
- প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
- হাত দিয়ে কোমর ধরে শরীরের নিম্নাংশ উপরে তুলুন।
- পা দুটো সোজা করে উপরে তুলে ধরুন।
- কয়েক সেকেন্ড এভাবে থেকে ধীরে ধীরে পূর্বাবস্থায় ফিরে যান।
৫. মর্জারিয়াসন (Marjariasana)
মর্জারিয়াসন বা ক্যাট-কাউ পোজ পেটে চাপ তৈরি করে এবং গ্যাসের সমস্যা কমায়। মর্জারিয়াসন করতেঃ
- প্রথমে হাঁটু ও হাতের উপর ভর দিয়ে বসুন।
- শ্বাস নিয়ে পিঠ বাঁকিয়ে মাথা উপরের দিকে তুলুন।
- শ্বাস ছেড়ে পিঠ উঁচু করে মাথা নিচু করুন।
- কয়েকবার এভাবে করুন।
৬. উত্তানপাদাসন (Uttanpadasana)
উত্তানপাদাসন পেটের পেশি শক্তিশালী করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। উত্তানপাদাসন করতেঃ
- প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
- পা দুটো সোজা করে একসাথে তুলুন।
- কয়েক সেকেন্ড এভাবে থেকে ধীরে ধীরে পা নামিয়ে পূর্বাবস্থায় ফিরে যান।
গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার পেটের ভিতরে গঠিত ক্ষত যা পেটে বা ক্ষুদ্রান্ত্রের শ্লেষ্মা স্তরকে প্রভাবিত করে। এটি সাধারণত হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া বা ননস্টেরয়ডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ (NSAIDs) এর অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে হয়। গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করতে এবং এর উপসর্গগুলি কমাতে কিছু কার্যকর পদ্ধতি এবং খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা যেতে পারে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলোঃ
গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায়
১. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন
- সুষম খাদ্য গ্রহণ প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। শাক-সবজি, ফল, পূর্ণ শস্য এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
- মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাঃ ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো আলসারের উপসর্গ বাড়াতে পারে।
- অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন পরিহারঃ অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো পেটের শ্লেষ্মা স্তরকে উত্তেজিত করতে পারে।
২. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার
- মধুঃ মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে যা আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক চামচ মধু খেতে পারেন।
- ক্যাবেজ জুসঃ ক্যাবেজ জুস আলসার নিরাময়ে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে থাকা এল-গ্লুটামিন হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং শ্লেষ্মা স্তর পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
- আদাঃ আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ রয়েছে যা আলসারের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। আদার চা বা আদার রস পান করতে পারেন।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের শ্লেষ্মা স্তরকে সুরক্ষিত রাখে।
৪. ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার
ধূমপান এবং অ্যালকোহল পেটের শ্লেষ্মা স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তাই এগুলো পরিহার করা উচিত।
৫. ওষুধের সঠিক ব্যবহার
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত। সাধারণত হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া দূর করতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং পেটের অ্যাসিড কমাতে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPI) বা হিস্টামিন রিসেপ্টর ব্লকার ব্যবহার করা হয়।
৬. মানসিক চাপ কমানো
মানসিক চাপ আলসারের উপসর্গ বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাই মানসিক চাপ কমানোর জন্য ধ্যান, যোগব্যায়াম বা অন্যান্য শিথিলকরণ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।
৭. হালকা ব্যায়াম
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়, যা সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়। এখানে কিছু সাধারণ ওষুধের তালিকা দেওয়া হলো যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে কার্যকর হতে পারেঃ
গ্যাস্ট্রিক দূর করার সাধারণ ওষুধ
১. অ্যান্টাসিডস (Antacids)
অ্যান্টাসিডস পেটে উৎপন্ন অতিরিক্ত অ্যাসিড নিরসনে কার্যকর। এই ওষুধগুলো দ্রুত কাজ করে এবং তাৎক্ষণিক স্বস্তি দেয়।
উদাহরণঃ Gaviscon, Maalox, Mylanta, Tums।
২. এইচ২ রিসেপ্টর ব্লকারস (H2 Receptor Blockers)
এই ওষুধগুলো পেটে অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার ক্ষেত্রে কার্যকর।
উদাহরণঃ Ranitidine (Zantac), Famotidine (Pepcid), Cimetidine (Tagamet)।
৩. প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস (PPIs)
প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস পেটে অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে খুবই কার্যকর। এই ওষুধগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ Omeprazole (Prilosec), Esomeprazole (Nexium), Lansoprazole (Prevacid), Pantoprazole (Protonix)।
৪. প্রো-কাইনেটিক এজেন্টস (Pro-kinetic Agents)
এই ওষুধগুলো হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে এবং পেটে জমে থাকা গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
উদাহরণঃ Metoclopramide (Reglan), Domperidone (Motilium)।
৫. প্রোবায়োটিকস (Probiotics)
প্রোবায়োটিকস হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটে সুস্থ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উৎসাহিত করে। এটি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
উদাহরণ: Yogurt with live cultures, Lactobacillus supplements
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে। এই পদ্ধতিগুলো প্রাকৃতিক এবং সহজলভ্য উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা যায়। এখানে কিছু ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারেঃ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
১. আদা
- পদ্ধতিঃ এক কাপ গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিন। ১০ মিনিট ঢেকে রেখে ছেঁকে নিন। প্রতিদিন ২-৩ বার আদা চা পান করুন।
২. মধু ও দারুচিনি
- পদ্ধতিঃ এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ মধু ও অর্ধেক চামচ দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এটি পান করুন।
৩. তুলসী পাতা
- পদ্ধতিঃ কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা, এক কাপ গরম পানিতে ৫-৬টি তুলসী পাতা দিয়ে ১০ মিনিট ঢেকে রেখে তুলসী চা পান করতে পারেন।
৪. পুদিনা পাতা
- পদ্ধতিঃ কয়েকটি পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। অথবা, এক কাপ গরম পানিতে ৫-৬টি পুদিনা পাতা দিয়ে ১০ মিনিট ঢেকে রেখে পুদিনা চা পান করতে পারেন।
৫. দই
- পদ্ধতিঃ প্রতিদিন খাবারের পর এক কাপ দই খেতে পারেন। এটি প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমায়।
৬. এলোভেরা রস
- পদ্ধতিঃ প্রতিদিন এক কাপ এলোভেরা রস পান করুন। এটি পেটের শ্লেষ্মা স্তরকে সুরক্ষিত রাখে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
৭. ফেনেল বীজ (মৌরি)
- পদ্ধতিঃ এক চা চামচ ফেনেল বীজ এক কাপ গরম পানিতে ১০ মিনিট ঢেকে রেখে ছেঁকে নিন। প্রতিদিন ২-৩ বার এই ফেনেল চা পান করুন।
৮. কলা
- পদ্ধতিঃ প্রতিদিন এক বা দুটি পাকা কলা খেতে পারেন। কলা প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং পেটে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৯. জিরা পানি
- পদ্ধতিঃ এক চা চামচ জিরা এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করুন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় হোমিও
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে হোমিওপ্যাথি একটি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে। হোমিওপ্যাথি নির্দিষ্ট লক্ষণ এবং ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্রদান করে। এখানে কিছু সাধারণ হোমিওপ্যাথিক ওষুধ এবং তাদের ব্যবহারের উপায় দেওয়া হলো যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারেঃ
গ্যাস্ট্রিক দূর করার হোমিওপ্যাথিক ওষুধ
১. নাক্স ভোমিকা (Nux Vomica)
নাক্স ভোমিকা সাধারণত অতিরিক্ত খাওয়া, মদ্যপান, এবং মানসিক চাপের কারণে হওয়া গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ডোজঃ সাধারণত 30C বা 200C শক্তির নাক্স ভোমিকা দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
২. কার্বো ভেজ (Carbo Veg)
কার্বো ভেজ অতিরিক্ত গ্যাস, পেট ফুলে যাওয়া, এবং হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- ডোজঃ 30C বা 200C শক্তির কার্বো ভেজ দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
৩. লাইকোপোডিয়াম (Lycopodium)
লাইকোপোডিয়াম সাধারণত বাম দিকে ব্যথা, পেটে গ্যাস, এবং অ্যাসিডিটির জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ডোজঃ 30C বা 200C শক্তির লাইকোপোডিয়াম দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
৪. আরসেনিকাম অ্যালবাম (Arsenicum Album)
আরসেনিকাম অ্যালবাম গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, অ্যাসিডিটি, এবং বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
- ডোজঃ 30C বা 200C শক্তির আরসেনিকাম অ্যালবাম দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
৫. পালসাটিলা (Pulsatilla)
পালসাটিলা সাধারণত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর হওয়া গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ডোজঃ 30C বা 200C শক্তির পালসাটিলা দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
৬. চায়না (China)
চায়না বা সিনকোনা হজম সমস্যা এবং পেটে গ্যাসের কারণে হওয়া দুর্বলতা দূর করতে ব্যবহৃত হয়।
- ডোজঃ 30C বা 200C শক্তির চায়না দিনে ২-৩ বার নেওয়া হয়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় কিছু সাধারণ পরিবর্তন আনাই যথেষ্ট। এই উপায়গুলো মেনে চললে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই, সুস্থ ও আরামদায়ক জীবনের জন্য এই পরামর্শগুলো মেনে চলুন এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যাকে বিদায় জানান।
ট্যাগসমূহঃ গ্যাস্ট্রিক দূর করার সহজ ও কার্যকর উপায়, গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না, চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়, গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়, গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার, গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম, গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর করার উপায়, গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঔষধ, ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়, গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় হোমিও।
খুটিনাটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url