খুশকি দূর করার উপায়। খুশকি দূর করার প্রাকৃতিক উপায়।
নারী কিংবা পুরুষ চুল নিয়ে সবাই কম বেশি খুশকির সমস্যায় ভোগে থাকেন। এক প্রকারে বলা যায়, চুলের অন্যতম শত্রু হলো খুশকি। এটি সাধারণ সমস্যা মনে হলেও এটা অনেকটা ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এ খুশকি একবার মাথার ত্বকে আক্রমণ করা শুরু করলে তা বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে মাথার স্কাল্পে চুলকানি ও চিটচিটে হয়। মূলত খুশকি হওয়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে কিছু কারণ হলো ডাই স্কিন, সেবোরিহিক ডার্মাটাইটিই, কেমিক্যাল যুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার, সংবেদনশীলতা ও মাতার ত্বকে খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বৃদ্ধি।
শুধু এগুলোই নয় খুশকির জন্য আরো দায়ী হলো শুষ্ক আবহাওয়া। বিশেষ করে দূষণ, অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ইত্যাদি হতে পারে খুশকির অন্যতম কারণ কারণ। খুশকির এই সমস্যার কারণে অতিরিক্ত চুল পড়ে যায়, চুল রুক্ষ হয়ে যায়, মাথার ত্বকে অনেক ধরনের সংক্রমণসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
আবহাওয়ার কারণে খুশকির আরো সমস্যা বেড়ে যায়। শীত কিংবা বর্ষা অথবা গরম কাল খুশকির সমস্যা হয় প্রায় সারা বছরই। বিশেষত ভেজা মাথা ঠিকমত পরিষ্কার না করে না শুকালে সারাদিন হিজাব পড়ে থাকলে তাতে ধুলো ময়লা জমে খুশকি হতে পারে।
খুশকি দূর করার উপায়/ খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়-
খুশকি থেকে রেহাই পেতে বাজারও বিভিন্ন ধরনের শ্যাম্পু পাওয়া যায়। নামিদামি শ্যাম্পু ব্যবহার করেও এই সমস্যার হাত থেকে সহজে নিস্তার মেলে না। আবার কখনো কখনো দেখা যায় এসব শ্যাম্পুতে রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে খুশকি চলে যাওয়ার বদলে উল্টো চুলেরই ক্ষতি হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অকালে চুল ঝরে যাওয়ার অন্যতম কারণই হলো এই খুশকি। এই খুশকি দূর করতে বাহিরের কোন রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা ভালো।
Remove dandruff permanentlly- খুশকি দূর করার উপায়- Dr. Wahida khan Chowdhury
এই প্রাকৃতিক উপাদান ঘরোয়া উপায়ে ব্যবহার করে খুশকি কিছুটা প্রতিকার করা যায়। আমরা চুলের যত্নে যে নারিকেল তেল মাথায় ব্যবহার করে থাকি তার মাধ্যমেও খুশকি দূর করা সম্ভব হয়ে থাকে। নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারলেও খুশকি দূর করা যায় সেই সঙ্গে চুল হবে প্রাণবন্ত আর ঝলমলে।
এছাড়াও লেবুর রস, মেথি, টকদই, পেঁয়াজের রস, অ্যালোভেরা জেল, আদার রস, নিম পাতা, অ্যাপল সাইডার ভিনেগার, রিঠা ও বেকিং সোডা ইত্যাদি এগুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে খুশকি দূর করা সম্ভব।
উপরে উল্লেখিত প্রাকৃতিক উপাদান গুলোর ব্যবহার করে খুশকি দূর করার উপায় নিচে লিখা হলোঃ
১) নারিকেল তেলের ব্যবহারঃ
চুলের যত্নে নারিকেল তেল অতুলনীয়। চুলের চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া চুল পরা কি মত যদি সমস্যা ও দূর করতে পারে নারিকেল তেল।
খুশকির সমস্যা দূর করার উপায়। স্বাস্থ্য প্রতিদিন। Sastho Protin- Ntv
কিন্তু অনেকেই নারিকেল তেল ব্যবহার করেও হতাশ হয়ে যায়। সঠিক নিয়মে নারিকেল তেল ব্যবহারের দাওয়া সম্পর্কে না জানলে খুশকি বিদায় করা সম্ভব হবে না। নারিকেল তেল অনেক রকম ভাবে ব্যবহার করা যায়। নারিকেল তেলের ডিপ কন্ডিশনিং খুশকির সমস্যাকে দ্রুত কমিয়ে আনতে কাজ করে।
প্রতিদিন রাতে নারিকেল তেল খুব অলিভ অয়েল গরম করে মেশিয়ে নিন। এখন আঙ্গুলের ডগায় পরিমাণ মতো তেল নিয়ে ভালো করে চলে মেসেজ করুন। তারপর চুলগুলো বেঁধে শুয়ে পড়ুন। পরের দিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহের মধ্যে ৩ দিন এরকম করলে খুশকি কমে যাবে। যাদের কাছে অলিভ অয়েল থাকবে না তারা আরো একটি উপায় ব্যবহার করতে পারেন। চুল শ্যাম্পুর সাহায্যে প্রথমে পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং শ্যাম্পু ব্যবহারের পর কোন কন্ডিশনার ব্যবহার করা যাবে না।
খুশকি দূর করার উপায়- খুশকির জন্য ভালো শ্যাম্পু- খুশকি কীভাবে দূর হবে- ডাঃ ফারজানা আফরোজ
তারপর চিরুনি মোটা দাঁতের সাহায্যে চুলগুলো আঁচড়িয়ে চুলের গোড়ায় নারিকেল তেল ব্যবহার করতে হবে। পুরো মাথায় নারিকেল তেল দেয়া হয়ে গেলে চুলগুলো তোয়ালের সাহায্যে ৩০মিনিট পেঁচিয়ে রাখতে হবে। তোয়ালে গরম করার জন্য উষ্ণ গরম পানিতে ভিজিয়ে তারপর পানি ফেলে নিতে হবে। ৩০ মিনিট হয়ে যাওয়ার পর চুলগুলো শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর সারারাত চুলগুলো রেখে রেখে পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এই নিয়মে প্রতি সপ্তাহের মধ্যে অন্তত একবার ব্যবহার করতে হবে। ফলে খুশকি দূর হয়ে যাবে আশা করছি।
২) লেবুর রসের ব্যবহারঃ
চুলের খুশকি তাড়ানোর জন্য আরেকটি উপায় হল লেবু। যা খুশি তাড়াতে সাহায্য করে।এক চামচ লেবুর রসের সাথে দুই চামচ দই ও এক চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় মেসেজ করে ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। ৩০ মিনিট হয়ে গেলে চুলগুলো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাি খুশকি দূর করতে দই ও লেবু ব্যবহারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
Live pruf । চুলের খুশকি দূর করার উপায়। Chuler khuski dur korar upay
৩) এলোভেরা জেলের ব্যবহারঃ
তিন টেবিল চামচ এলোভেরা জেলের সঙ্গে ৯-১০ ফুটা নিমের তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় মেসেজ করুন। নিমের তেল এন্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে খুশকি দূর করতে কাজ করে। মিশ্রণটি গোড়ায় মেসেজ করার পর ২০ মিনিট রেখে দিন। মিনিট পর চুলগুলো ধুয়ে ফেলুন। এতেও খুশকি দূর হয়ে যায়।
৪) বেকিং সোডার ব্যবহারঃ
উপরের উল্লেখিত উপায় গুলোতে যদি খুশকি না যায় সাইডার ভিনেগারের সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে মাথায় ত্বকে লাগাতে পারেন মিশ্রণ মাথার ত্বকের ph এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে খুশকি সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।
আশা করি উপরে উল্লেখিত উপায় গুলো ব্যবহার করে চুলের খুশকি দূর করা যাবে। আশা করছি আর্টিকেলে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মেনে চললে সহজে খুশকি দূর করতে পারবেন।
-সাদিয়া ইসলাম
খুটিনাটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url