অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন।

জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ। যেখানে প্রতিটি মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করছেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক হওয়ায় জনগণ প্রত্যক্ষ ভাবে ভোট দিয়ে তাদের সরকার নির্বাচন করে থাকেন। প্রতিটি জনগণ যেন তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত ভাবে পেতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক ভোটার আইডি কার্ড পদ্ধতি চালু করা হয়। আজকে আমরা জানবো কিভাবে অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করা যায়।

নতুন ভোটার হওয়ার শর্তসমূহঃ

১। অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২। পূর্বে ভোটার হওয়া যাবে না।
৩। কমপক্ষে ১৬ বা তার বেশি বয়স হতে হবে।

নতুন ভোটার হতে হলে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজনঃ

১। ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ। [নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরি করার পদ্ধতি জেনে নিন]
২। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সনদ/সার্টিফিকেট। যেমন PSC,JSC,SSC,HSC ইত্যাদি।
৩। বাবা-মা'য়ের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৪। ব্যক্তির রক্ত পরিক্ষার রিপোর্ট।
৫। চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিক সনদ ও নতুন ভোটার হওয়ার প্রসঙ্গে প্রত্যয়নপত্র।
৬। বাড়ির খাজনার রশিদ(চৌকিদার কর্তৃক প্রদত্ত) ও বিদ্যুৎ বিলের কাগজ।
৭। বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ইত্যাদি।

অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়াঃ

অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য আমরা প্রথমে আমাদের মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের যেকোনো একটি ব্রাউজারে চলে যাবো। তারপর সার্চ বারে গিয়ে লিখবো "http://www.nidw.gov.bd/" অথবা লিংকটিতে ক্লিক করার সাথে সাথে আমাদের সামনে নিচের পেইজটি দেখানো হবে।
১। উপরের লিংকে ক্লিক করলে এই পেইজটি দেখা যাবে। তারপর ১নং বক্সে দেখানো "NID Online Services" লেখাটিতে ক্লিক করলে আমাদের সামনে নিচের পেইজটি দেখানো হবে।
২। তারপর আমাদের সামনে নতুন আরেকটি সাইট প্রদর্শিত হবে। সেখানে ২নং বক্সে দেখানো "নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন" লেখা বক্সের মধ্যে "আবেদন করুন" বাটনে ক্লিক করবো। তাহলে আমাদের পরবর্তি ধাপে নিয়ে যাবে।
৩। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আমাদের সামনে "অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন" পেইজটি দেখানো হবে যেখানে ৩নং বক্সের মধ্যে থাকা "পুরো নাম(ইংরেজিতে)" খালি ঘরটিতে জন্ম নিবন্ধন ও সার্টিফিকেট থেকে দেখে দেখে ব্যক্তির ইংরেজি নামটি সঠিক ভাবে টাইপ করে দেবো।
৪। নাম সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে ৪নং বক্সে ব্যক্তির "জন্ম তারিখ" টি সঠিকভাবে দিয়ে দেবো।
৫। নাম ও বয়স সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে ৫নং বক্সে একটি "ক্যাপচা কোড" দেওয়া হবে যা নিচের খালি ঘরটিতে দেখে দেখে টাইপ করে দেবো।
৬। ব্যক্তির নাম,বয়স ও ক্যাপচা কোড সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে ৬নং বক্সে দেখানো "বহাল" বাটনে ক্লিক করে দেবো। তাহলে আমাদের সামনে নিচের পেইজটি চলে আসবে।
৭। উপরের তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে ৭নং বক্সে আমরা ব্যক্তির "মোবাইল নম্বরটি" দিয়ে দেবো।
৮। তারপর ৮নং বক্সের মধ্যে "বার্তা পাঠান" বাটনে ক্লিক করে দেবো।
৯। "বার্তা পাঠান" বাটনে ক্লিক করার ১মিনিটের মধ্যেই উক্ত নম্বরে ছয় সংখ্যার একটি যাচাইকরন কোড পাঠানো হবে যা ৯নং বক্সে থাকা "যাচাইকরন কোডটি দিন" বক্সে সঠিকভাবে দিয়ে দিবো।
১০। কোডটি দেওয়া হয়ে গেলে ১০নং বক্সে থাকা "বহাল" বাটনে ক্লিক করে দেবো। যদি সার্ভার ত্রুটির জন্য মোবাইল নম্বরে কোডটি না গিয়ে থাকে তাহলে "পুনরায় পাঠান" বাটনে ক্লিক করে দিলেই উক্ত নম্বরে আবার কোড চলে যাবে।
১১। যাচাইকরন কোডটি সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে আমাদের সামনে উপরের পেইজটি দেখানো হবে যেখানে ১১নং বক্সের মধ্যে একটি "ইউজারনেম" দিতে হবে। ইউজারনেম টি ইংরেজি অক্ষর(বড় ও ছোট) এর সাথে কিছু সংখ্যা দিয়ে তৈরি করতে হবে। যেমনঃ Bangladesh1971
১২। তারপর ১২নং বক্সে একটি শক্তিশালী "পাসওয়ার্ড" দিতে হবে। পাসওয়ার্ডটি ও ইংরেজি অক্ষের সাথে সংখ্যা যুক্ত করে তৈরি করে দিতে হবে।
১৩। ১২নং বক্সে দেওয়া "পাসওয়ার্ডটি পুনরায়" ১৩নং বক্সে দিতে হবে।
১৪। ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়ে গেলে আমরা ১৪নং বক্সে দেখানো "বহাল" বাটনে ক্লিক করে দিবো। তাহলে আমাদের অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরে আমাদের সামনে নিচের পেইজটি দেখানো হবে।
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে এখন আমাদেরকে ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ, সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখে দেখে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে টাইপ করে দিতে হবে। যদি আমাদের টাইপে ভুল হয় তাহলে ভোটার আইডি কার্ডটিও ভুল তৈরি হবে। তাই এই ধাপে তথ্যগুলো সঠিকভাবে সাবমিট করতে হবে।
সকল তথ্য সঠিকভাবে সাবমিট করার জন্য আমাদেরকে ১৫.১নং অথবা ১৫.২ নং বক্স এর মধ্যে যেকোনো একটিতে ক্লিক করতে হবে। তাহলে প্রোফাইলে নিয়ে যাবে এবং নিচের পেইজটি দেখানো হবে। অপরদিকে আমাদের অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড যদি পরিবর্তন করা দরকার হয় তাহলে ১৬নং বক্সে ক্লিক করে দিয়ে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিতে পারবো।


১৭। প্রোফাইলে চলে আসার পরে আমাদের সামনে ১৭নং বক্সটি দেখা যাবে যেখানে "ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা" এই তিনটি ঘর ভালো ভাবে পূরণ করতে হবে।
১৮। তথ্য গুলো সঠিকভাবে দেওয়ার জন্য আমাদের ১৮নং বক্সে থাকা "এডিট" বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে। তারপর আমাদের সামনে নিচের পেইজটি দেখানো হবে যেখানে ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য সাবমিট করতে হবে।

১৯। তিনটি ধাপে আমাদেরকে সমস্ত তথ্য দিয়ে আবেদনটি সাবমিত করতে হবে।যথাঃ
        i) ১ম ধাপ তথ্য এডিটঃ এই ধাপে ব্যক্তির "ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা" দিতে হবে।
        ii) ২য় ধাপ কাগজপত্র/নথি সরবরাহ করুনঃ যদিও এই ধাপে কাগজপত্র সরবরাহ করতে বলা                 হয়েছে কিন্তু আবেদন সম্পন্ন করার জন্য কোনো কাগজপত্র স্ক্যান করে জমা দিতে হবে না।
        iii)৩য় ধাপ নিশ্চিত করুন এবং জমা দিনঃ এই ধাপে আমাদের আবেদন সম্পন্ন করা নিশ্চিত                 করতে হবে।
২০। ১৯নং বক্সে দেখানো ৩টি ধাপ সম্পন্ন করার জন্য আমাদের ২০নং বক্সে দেখানো ৩ ধরনের তথ্যের মধ্যে প্রথমে "ব্যক্তিগত তথ্য" ঘরটি পূরণ করে দিতে হবে।
২১। ২০নং বক্সের মধ্যে "ব্যক্তিগত তথ্য" ঘরটি সঠিকভাবে পূরণ করে দেওয়ার পরে ২১নং বক্সের মধ্যে থাকা "পরবর্তী" বাটনে ক্লিক করে দিতে হবে।
২২। "ব্যক্তিগত তথ্য" ঘরটি পূরণ করার পরে আমাদের ২২নং বক্সে থাকা "অন্যান্য তথ্য" ঘরটিও সঠিকভাবে পূরণ করে দিতে হবে।
২৩। "ঠিকানা" গুলো দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে "অবস্থানরত দেশের নাম" এ "বাংলাদেশ" অপশনটি দিতে হবে। তারপর "ভোটার ঠিকানা" ঘরটিতে "স্থায়ী/বর্তমান" অপশনের মধ্যে উক্ত ব্যক্তি যেই ঠিকানায় ভোট দিতে ইচ্ছু সেই ঠিকানা সিলেক্ট করে দেবো।
তারপর "বর্তমান ঠিকানা" ঘরটিতে ধাপে ধাপে পুরো ঠিকানাটা দিয়ে দেবো।
২৪। বর্তমান ঠিকানা দেওয়া হয়ে গেলে একটু নিচের দিকে "স্থায়ী ঠিকানা" অপশনটি দেখতে পাবো। সেখান থেকে ব্যক্তির স্থায়ী ঠিকানাটি দিয়ে দিবো।
২৫। এই বক্সে ব্যক্তির "ভোটার এরিয়া" দিতে হবে। ভোটার এরিয়া বলতে ঐ ব্যক্তি তার স্থায়ী ঠিকানার মধ্যে থাকা যতগুলো ভোট কেন্দ্র আছে সবগুলো থেকে কোন ভোট কেন্দ্রেটিতে ভোট দিবে সেটা বাছাই করা। তাই "ভোটার এরিয়া" বক্সের মধ্যে ব্যক্তির ভোটার এরিয়া দিয়ে দেবো। তারপর ২১নং বক্সে থাকা "পরবর্তী" বাটনে ক্লিক করে দিলেই ১৯নং বক্সের ৩টি ধাপের ১টি শেষ হয়ে যাবে।
২৬। ব্যক্তির তথ্য দিতে গিয়ে যদি কোথাও কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে ২৬নং বক্সে থাকা "পেছনে" বাটনে ক্লিক করে তা সংশোধন করা যাবে।
২৭। "কাগজপত্র/নথি সরবরাহ করুন" এই ধাপে কোন কাগজপত্র স্ক্যান করে জমা দিতে হবে না। ব্যক্তির তথ্য সঠিকভাবে দেওয়াটাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে ২৭নং বক্সে থাকা "পরবর্তী" বাটনে ক্লিক করে দিবো।
২৮। উপরের দুইটি ধাপ সম্পন্ন হয়ে গেলে এখন সর্বশেষ ধাপ "নিশ্চিত করুন" এ এসে "সাবমিট" বাটনে ক্লিক করে দিলেই অনলাইন আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। তারপর ব্যক্তির প্রোফাইলে নিয়ে আসবে।
২৯। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে ব্যক্তির প্রোফাইলে একটি নোটিফিকেশান দেখা যাবে যেখানে বলা হবে "আপনার একটি অ্যাপলিকেশান পেন্ডিং রয়েছে"।
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন আবেদন পত্রটি ২৯নং বক্সে থাকা "ডাউনলোড" বাটনে ক্লিক আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে আসলে ওনারা বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দিবে।

প্রিয় পাঠক, খুটিনাটি এমন সকল বিষয়ের তথ্য খুব সহজেই পেতে আমাদের সাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

খুটিনাটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url