জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন অনলাইন আবেদন
জন্ম নিবন্ধন
প্রতিটা মানুষের জন্মগ্রহণ করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তার জীবন চলা। তাই প্রতিটি দেশের সরকার জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য চালু করেছে জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টার পদ্ধতি। যার মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরের প্রতিটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেই তথ্য অনুযায়ী নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা হয়।
কিভাবে নতুন জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতে হয় সেই বিষয় জানতে হলে
এই লিংকে ক্লিক করে জেনে নিতে পারবেন।
আজকে আমরা জানবো কেন জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন করা প্রয়োজন সেই বিষয়েঃ
জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন অনেক গুলো কারণে করা হয়ে থাকে যার মধ্যে বিশেষ কিছু কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১। পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধনের সাথে অমিল
২। পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ডের সাথে অমিল
৩। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের(সার্টিফিকেট) সাথে অমিল
৪। পাসপোর্টের সাথে অমিল
উপরোক্ত কারণ গুলো ছাড়া ও কিছু কিছু সময় আমাদের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা প্রয়োজন পড়ে।
মোবাইল ও কম্পিউটার দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন পদ্ধতিঃ
মোবাইল এবং কম্পিউটার দিয়ে একই পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন আবেদন করা হয়ে থাকে। তাই আমরা কম্পিউটার দিয়ে কিভাবে আবেদন করা যায় সেটা দেখবো এবং আপনি চাইলে মোবাইলে ডেক্সটপ সাইট অন করে কম্পিউটারের মতো করে আবেদন করতে পারবেন। সে জন্য আমাদের মোবাইলের যেকোনো ব্রাউজারে গিয়ে সার্চবারে টাইপ করবো "https://bdris.gov.bd/br/correction"
তাহলে নিচের পেইজটি আমাদের সামনে আসবে।
১। ১নং বক্সের মধ্যে যেই নিবন্ধনটি সংশোধন করবো সেই নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে ২নং বক্সে থাকা "অনুসন্ধান" বাটনে ক্লিক করলে ৩নং বক্সের মধ্যে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির তথ্য চলে আসবে।
২। ৩নং বক্সে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির নিজের নাম(বাংলা ও ইংরেজি), পিতা-মাতার নাম(বাংলা ও ইংরেজি) এবং বয়স দেখা যাবে। তারপর ৪নং বক্সে থাকা "নির্বাচন করুন" বাটনে ক্লিক করলে ৫নং বক্সটি দেখা যাবে।
৩। ৫নং বক্সে থাকা "কনফার্ম" বাটনে ক্লিক করলে আমদের চাহিত সংশোধিত তথ্যে দেওয়ার পেইজটিতে নিয়ে যাবে। সেখানে আমরা আমাদের নিবন্ধনের যেই যেই তথ্যে সংশোধন করবো তা উল্লেখ করে নিবন্ধনের সংশোধন আবেদনটি সম্পন্ন করতে পারবো।
৪। ৫নং বক্সে থাকা "কনফার্ম" বাটনে ক্লিক করার পরে আমাদের সামনে ৬নং বক্সটি দেখা যাবে। সেখানে "সংশোধিত তথ্য নির্বাচন" লেখার নিচে "বিষয়" এর পাশে থাকা "নির্বাচন করুন" বক্সে ক্লিক করে যেই যেই তথ্য সংশোধন করবো সেগুলো বাছাই করে "সংশোধিত তথ্য" গুলো লিখে দিয়ে পাশে থাকা "সংশোধনের কারন" উল্লেখ করে দিয়ে দেবো। অনেক গুলো তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হলে ৭নং বক্সে থাকা "+ আরো তথ্য সংযোজন করুন" বাটনে ক্লিক করলে আরো তথ্য সংশোধন করার জন্য অপশনটি চলে আসবে। সেখান থেকে আমরা আরো তথ্য সংশোধন করতে পারবো।
৫। নিচের ছবিতে থাকা ৬.১নং বক্সে কতগুলো তথ্য সংশোধনের নমুনা ছক দেওয়া হলো।
৬। ৮নং বক্সে থাকা ব্যক্তির "জন্মস্থানের ঠিকানা" প্রদান করতে হবে। তেমনিভাবে ৯নং ও ১০নং বক্সে থাকা ব্যক্তির "স্থায়ী ঠিকানা" ও "বর্তমান ঠিকানা" প্রদান করতে হবে।
৭। ১১নং বক্সে আবেদনকারীর তথ্য প্রদান করতে হবে। সেখানে "আবেদনাধীন ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক" অপশনটিতে ব্যক্তি নিজে আবেদন করলে "নিজ" দিতে হবে,যদি পিতা বা মাতা আবেদন করে থাকে তাহলে "পিতা"/"মাতা" যেকোনো একটি তে বাছাই করে দিতে হবে। যদি আবেদনকারী নিজে কিংবা পিতা-মাতা না হয় তাহলে পাশের যেকোনো একটি বাছাই করতে হবে এবং নিচে থাকা "পিতা,মাতা ব্যতিরেকে অন্য কেহ হইলে" ঐ ব্যক্তির "জন্ম নিবন্ধন নম্বর" ও "জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর" প্রদান করতে হবে। তবে আপনারা এখানে নিজ অথবা পিতা/মাতা বাছাই করে দিবেন।
৮। ১২নং বক্সে থাকা "সংযুক্তি" ধাপ হচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আমাদের নিবন্ধনের ভুলগুলোর প্রমান হিসেবে এখানে যথাযত প্রমানপত্র দাক্ষিল করতে হবে। এসব প্রমানপত্রের উপর ভিত্তি করে আমাদের নিবন্ধন ভুল সংশোধনের অনুমতি পাবে। তাই এই ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রমানপত্র হিসেবে আমরা ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড, সার্টিফিকেট, স্কুল প্রত্য্যনপত্র, বাবা-মায়ের ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্টসহ আরো অনেককিছু দাক্ষিল করতে পারবো। নিচের ছবিতে কিভাবে সংযুক্তি দাক্ষিল করতে হয় তা দেখানো হয়েছে।
৯। ১২.১নং বক্সের মধ্যে প্রমানপত্র দাক্ষিলের জন্য প্রতিটি ছবির সাইজ "সর্বোচ্চ ১০০কিলো বাইটের(100kb)" মধ্যে হতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রমানপত্র দাক্ষিল করে "File Type" এর ঘরে উক্ত বিষয়টি উল্লেখ করে দিতে হবে। যেমনটি আমি এখানে ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ডটি দিয়েছি তাই "নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র" অপশনটি দিয়ে দিয়েছি। তেমনি আপনারা যেই প্রমানপত্রটি দাক্ষিল করবেন সেটার ধরন বাছাই করে দিবেন। তারপর পাশে থাকা "start" বাটনে ক্লিক করে প্রমানপত্রটি আপলোড করে নিতে হবে।
১০। ১২.১নং বক্সের মধ্যে সকল প্রমানপত্র দাক্ষিল হয়ে গেলে আমরা চলে যাবো ১৩নং বক্সে থাকা "সাবমিট" বাটনে। "সাবমিট" বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথেই আমাদের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদনটি সম্পন্ন হয়ে যাবে।
১১। ১৩নং বক্সে থাকা "সাবমিট" বাটনে ক্লিক করার পরে আমাদের সামনে ১৪নং বক্স সংবলিত নতুন একটি পেইজ আসবে যেখানে বলা হবে "Success,আবেদনপত্রটি সফল ভাবে সাবমিট করা হয়েছে"। তারপর নিচে একটি "আবেদন নম্বর" দেওয়া হবে যা দিয়ে আমাদের নিবন্ধনটি আমাদের ইউনিয়ন অফিসে সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১২। ১৫নং বক্সে থাকা "আবেদনপত্র প্রিন্ট" করুন বাটনে ক্লিক করে আমাদের আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করে নিতে হবে অথবা সেইভ করে নিতে হবে। আবেদন পত্রটি ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে গিয়ে সচিব মহোদয়ের নিকট জমা দিলেই বাকি কাজটা ওনি করে দিবে।
খুটিনাটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url