রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত
রমজান শব্দের অর্থ কী?
আরবি "রমজ" থেকে "রমজান" শব্দটি এসেছে। যার অর্থ হচ্ছে দহন বা পোড়ানো। এ মাসে রোজা পালন করলে মানুষের মধ্য হতে লোভ-লালসা, সকল প্রকার পাপ কাজ ও হিংসা-বিদ্বেশ দূর হয়ে যায়। আরবি পঞ্জিকার ১২টি মাসের মধ্য যেই মাসের কথা শুদুমাত্র কোরআনে বর্নিত হয়েছে তা হচ্ছে রমজান মাস। এ মাসে পালিত রোজাকে "রমজানের রোজা" বলা হয়।
রমজান মাসের গুরুত্বঃ
রমজানকে বলা হয় রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস। তাই এই মাস টিতে সকল মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষ বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে থাকেন।
ইসলামের মৌলিকা পাঁচটি বিধানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রমজান। দ্বিতীয় হিজরীতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা'আলা উম্মতের উপর রোজা ফরজ করেছেন।
মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, "যে ব্যক্তি কোনো ওজর বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা পরিত্যাগ করবে- সে যদি ওই রোজার পরিবর্তে আজীবন রোজা রাখে তবুও ওই এক রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না।"
তিরমিজি,হাদিসঃ ৭২৩
রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবি (সঃ) আরো বলেনঃ "বরকতময় মাস-রমজান, তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। আল্লাহ তোমাদের জন্য পুরো মাস রোযা পালন ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। শয়তানদের এ মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে দেয়া হয়।
সুনান আত-তিরমিযি হাদিসঃ ৬৮৩
রমজান মাসের ফজিলতঃ
পবিত্র মাহে রমজান আমলের মাস, ফজিলতের মাস, রহমত, বরকত এবং ক্ষমা লাভের মাস।
রমজানের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার জন্য রমজানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।"
সহীহ বুখারী আয়াতঃ ২০১৪
রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, "কিন্তু রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। কারন, রোজা শুধুমাত্র আমার জন্য। তাই এর প্রতিদান আমি নিজে দেবো।"
সহীহ বুখারী আয়াতঃ ১৮৯৪
এ মাসে মানুষের প্রতিটি আমল বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। প্রতিটি নেকি ১০গুণ থেকে শুরু করে ৭০০গুণ(ক্ষেত্র বিশেষে) পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়ে থাকে। তা ছাড়া রাইয়্যান নামক জান্নাতের একটি দরজা আছে যাতে শুধুমাত্র কেয়ামতের দিন রোজাদারগণ প্রবেশ করতে পারবে। রোজাদারগণ প্রবেশের পর আর কাউকে সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এ মাসে অসংখ্য মানুষের দো'য়া কবুল করা হয়। জাহান্নামিদের নাম জাহান্নামের তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয় এবং তাদেরকে এই মাসে মুক্তি ঘোষণা করে দেওয়া হয়।
মহানবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা রমজান মাসের প্রত্যেক দিন ও রাতে অসংখ ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া কবুল করেন।"
মুসনাদে আহমদ-হাদিসঃ ৭৪৫০
প্রিয় পাঠক, রমজান মাস হচ্ছে সকল মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য গোনাহ মাফের মাস। কেননা আল্লাল তাআ'লা নিজে সকল রোজাদারদের পুরষ্কার দিবেন। এই মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হবে। তাই আমারা সকলে এই মাসে বেশি বেশি আমল করার মাধ্যমে নিজেদের সমস্ত গোনাফ আল্লাহ'র নিকট ক্ষমা চাইবো।
খুটিনাটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url